Today 10 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

খানভবন হরর

: | : ০১/০২/২০১৪

৬ষ্ঠ পর্ব

আধারে ডেকে আছে সমস্ত আকাশ।ঘোর অমাবস্যার রাত যাকে বলে।শুধু গাড়ীর সামনে কিয়দংশ দেখা যাচ্ছে হেডলাইটের আলোয়।চারিপাশে দেখা না গেলে তাদের বুঝতে কোনই অসুবিধা হলনা ভয়ন্কর কিছু প্রানী চারিপাশে থেকে তাদের গাড়ীকে ঘিরে রেখেছে।গাড়ীর ভিতরের মানুষগুলো অনেকটা অচেতন ষ্থবির এর মতন হয়ে আছে ।এত সাহসী মানুষ হওয়া স্বত্বেও তারা সবাই ভীষন আতংকের সাথে ভ্যাবচ্যাকা খেয়ে আছে।

ভাঙ্গা গ্লাসের ফাক দিয়ে যা দেখা যাচ্ছে তাতে বুঝতে অসুবিধা হয়না এরা মাংশাসী নেকড়ে।

হে আল্লাহ হে মাবুদ বাচাও আমাগো।এ কি দেখতেছি।কাপতে কাপতে ড্রাইভার সিটের সাথে লেগে শুয়ে পড়ে।

একটা নেকড়ে লাফ দিয়ে জানালার গ্লাস দিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছে।শিউরে উঠল গাড়ীর ভিতরে মানুষগুলো নেকড়ের চেহারা দেখে।অতিকায় জলন্ত চোখ জিহবা বের করে তাকিয়ে আছে ।বুঝতে অসুবিধা হয়নি এই ক্ষুধার্ত নেকড়ে গুলোকে তাদের পিছনে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কারা করছে এই ভয়ন্কর কাজ? এরা কি মানুষ?নাকি কোন অস্বাভাবিক প্রেত সাধনায় জড়িত কোন পিশাচের দল।অথবা কোন ভয়ন্কর ক্রিমিনালের দল যাদের উদ্দেশ্য এখানকার অধিবাসীদের তাড়িয়ে এই লোকালয়ের অধিকার নিজের হাতে ধরে রাখা।এসব ভাবছে পুলিশের লিডারটি মনে মনে।

কিন্তু তাহলে হুজুরকে থাপ্পড় দেওয়া বাথটাবে ক্ষতবিক্ষত লাশ ক্লোসেটে পাখীর ছিন্ন মাথা এসবের কি ব্যাখ্যা হবে?

আফজল মিঞা শিঘ্রী মাথা নিচু করে পিছনে চলে আস।চিৎকার করে রহমান সাহেব বলে উঠলেন।একটা নেকড়ে লাফ মেরে জানালা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছে।সঙ্গে সঙ্গে একজন পুলিশের গুলি নেকড়েকে বিদ্ধ করল।বুঝা গেল তাতে নেকড়েটা কাতরধ্বনি করে গাড়ী থেকে নীচে পড়ে গেল।

আফজল মিঞা গাড়ীর লাইট বন্ধ কর চিৎকার করে পুলিশের লোকটি বলল।

খুব সাবধানে বিপদের ঝুকি নিয়ে দুইপাশে দুইজানালার কিয়দংশ আস্তে আস্তে খুলল দুই পুলিশ।পিস্তল সামান্য বের করে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে লাগল।একই সঙ্গে ড্রাইভার গাড়ী চালনো শুরু করল।

হেডলাইট না জ্বালিয়ে গাড়ী চালানো অন্ধকার রাস্তা নিরুপায় দিশেহারার মত গাড়ী চালাতে লাগল।একই সঙ্গে পুলিশের গুলি বর্ষন চলতে লাগল।এভাবে পাচমিনিট চলার পর মনে হল আশেপাশের পরিবেশে নিস্তব্দতা এসেছে।ড্রাইভার গাড়ী থামাল।

স্যার কি করবেন এখন ও কি যাবেন যে অন্ধকার রাস্তা? ড্রাইভার অসহায়ের মত জিজ্ঞাসা করে।

না গিয়ে কি করব নিরুপায় হয়ে বলে পুলিশের দলপতিটি।কাইয়ূম এখন ও অজ্ঞান।ওর কিছু হলে ওর বিধবা মারে কি জবাব দিব।আমার ছোটভাইয়ের ছোট।আজকে জয়েন করল বেচারা।নেকড়ের কামড় খাওয়া তরুন অচেতন পুলিশটিকে দেখিয়ে বলে।যেতে হবে হসপিটালে ওর জন্য।

আপনার ও তো বেশ ক্ষত হয়েছে রহমান সাহেব দলপতিটিকে সহানুভূতির সাথে বলে।

চালাও ড্রাইভার আল্লাহ মালিক।

অন্ধকার এবড়ো থেবড়ো রাস্তা।চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে ড্রাইভারের।

আধাঘন্টার মত চলছে গাড়ী।এখন ও কোন রাস্তা বা ষ্ট্রীট লাইটের দেখা তারা পায়নি।

একঘন্টা এদিক ওদিক চলতে চলতে হঠাৎ একটু আলো দেখতে পেয়ে তারা আশান্বিত হয়ে উঠে।যাক তাহলে এখানে আশেপাশে মানুষ আছে।

বাড়ীর কাছাকাছি আসাতে চমকে উঠে গাড়ীর স্টার্ট বন্ধ করে দিল।তারা ঘুরে ফিরে আবার খানভবনের কাছে চলে এসেছে আবার।গাড়ীর ভিতরের প্রানীগুলি অবাক হয়ে গেল।এ দেখি গোলক ধাধার মত।তারা একই রাস্তায় এতক্ষন ঘুরছিল।

অগত্যা হতাশ হয়ে গাড়ী থেকে তারা নামতে বাধ্য হল।গাড়ী থেকে নেমে তারা যা দেখল তাতে সবাই ভয়ে জমে পাথরের মত হয়ে গেল।

অন্ততপক্ষে দশ থেকে বারজন মানুষ আপাদমস্তক কালো আলখাল্লায় ঢাকা মুখে মুখোশ এবং হাতে মশাল খানভবনকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে।

(চলবে)

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top