Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

হটাৎ একদিন

: | : ০৬/০২/২০১৪

sharlo

গোয়েন্দা কাহিনী লিখতে চেষ্টা করছি।
সব লেখার তুলনায় এই লেখা বেশী কঠিন মনে হচ্ছে।ক্লু মোটিভ খুজে পাচ্ছিনা খুনের।সমস্যা নাহলে ঘটনা সাজাব কিভাবে।অবশ্য আমি এখনও এই বাড়ীর বাসিন্দাদের পরিচয় দিতে পারিনি।ভেবে দেখলাম গোয়েন্দা কাহিনী লেখার জন্য দরকার খুবই শার্প বুদ্ধি প্যাচানো জটিল মন ।আমি পৃথিবীকে দেখি বেশী রকম সহজভাবে। দেখা যাক কি ঘটনায় যায় শেষ পর্যন্ত।সবাইকে ধন্যবাদ।পড়ার আমন্ত্রন জানানো হল।তো চলে যাওয়া যাক মূল গল্পে।
ৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃ

প্রথম পর্ব

দুইটা সিড়ি উঠতে তিনি হাপিয়ে যাচ্ছেন। ডায়বেটিস হয়ে গেল না তো। এত ক্লান্ত লাগে কেন ইদানিং।

এই যা চিনি দুধ তো আনতে ভুলে গেল। গিয়ে রাহেলার মেজাজ দেখা লাগবে।সব ভুলে যাওয়ার রোগ হচ্ছে। আজকে কাজ শেষ করে বাসায় পৌছতে সাত টা বেজে গেল।আনিসুল হক সাহেব এর বাসা কাঠাল বাগান এর লাল মসজিদ এর পাশে। বাসায় টোকা দিতে যাবে মনে পড়ল চিনি দুধ কেনা হলনা। একবার ভাবলো নিচে নেমে আবার নিয়ে আসবে কিনা। নাহ আজকে শরীর চলছেনা। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাহিরে যাওয়া যাবে চিনি র জন্য।।রাহেলা মেজাজ যেরকম তুঙ্গে দেখেছে সকালে চিনি ছাড়া বাসায় গেলে দুখ আছে। তার পর সাহস করে ঘরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব ঝগড়া শেষ হয় তোমার আর আমার প্রতি ভালবাসা নাই।এই বলে তার পর অবধারিত ভাবে হু হু করে কাদতে বসবে। মনে হয় সংসার ছেড়ে বিবাগী হয়ে যাই। যুক্তি হচ্ছে এখন কেন আনিসুল সব কিছু ভুলে যায়। আগে তো কখনো ভুলতনা। অফিসে স্যার এর প্রেসার ঘরে বউ এর ক্যাচক্যাচানি। মনে মনে ঠিক করেছে আর যদি বউ কোনো কথা বলে সোজা সুন্দর বনে চলে যাবে। কাজ ও দরকার নাই সংসার ও দরকার নাই।

দরজায় নক করতে যাবে দেখে পাশা বাসা হা করে খোলা। চারিদিকে সোফা বালিশ মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। কি ব্যাপার এত অগোছালো ময়লা বাসা দরজা এভাবে খোলা কেন ?তিনি মনে মনে ভাবছেন। আসে পাশে কাওকে দেখা যাচ্ছেনা। তিনি যেই বাসায় ভাড়া থাকেন মালিক লন্ডন এ থাকেন। কেয়ারটেকার আর দারোয়ান এর হাতে এই বাসার যাবতীয় দায়িত্ব। মালিক না থাকলে যা হয় কখনো পানি থাকেনা কখনো গ্যাস থাকেনা। সম্ভবত এরা গ্যাস বিল ইলেকট্রিক বিল ঠিক মত পরিশোধ করেনা।
দরজায় নক করতে করতে মাথা ঘুরিয়ে পাশের বাসায় দেখার চেষ্টা করলো। না কাওকে দেখা যাচ্ছেনা।

ঘরে ঢুকতে রাহেলা র জিজ্ঞাস্য চিনি দুধ আনছ?

শান্ত ভাবে ভিতরে ঢুকলেন তিনি। রাহেলার কথা জবাব না দিয়ে বললেন দেখো হাত ইশারা করে পাশের বাসা দেখালেন।

কি অগোছালো করে বাসা দরজা খুলে রাখছে।

রাহেলা খুব কৌতুহলে দেখার চেষ্টা করলো ভিতরে।

পরক্ষণে নির্লিপ্ত স্বরে বলল অন্যের ঘর দেখার দরকার কি আমার ঘর পরিষ্কার থাকলে ই হল।

খাওয়া দাওয়ার পর আবার বের হলেন চিনি দুধ আনতে। এখনো পাশের বাসার দরজা একইভাবে খোলা।

কিরে সব কি মরলো নাকি এ বাসার ?মনে মনে ভাবেন তিনি। পরক্ষণে লজ্জা পেয়ে যান। তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আসেন। দারোয়ান বা কেয়ারটেকার কাওকে নিচে পেলেন না। অগত্যা তিনি সামনের মুদির দোকান থেকে চিনি দুধ আনতে বের হলেন।

বাহির থেকে চিনি দুধ সহ ফিরে আসলেন।এখন পাশের বাসার দরজা একইভাবে খোলা।আর কৌতুহল সম্বরন করতে পারলেননা।তাছাড়া চিন্তা করছেন যে দিনকাল পড়েছে এখন।সবার সতর্ক থাকা উচিত।দরজা অবশ্যই বন্ধ করে রাখা উচিত।

বেশ কয়েকবার দরজা ধাক্কা দিলেন।

কেও আছেন বাসায় বার বার ডেকে দেখছেন সাড়া নাই।

তারপর কোনো শব্দ নাই দেখে দরজা একটু সরিয়ে ভিতরে পা দিলেন। ভিতরে পা দিয়ে যা দেখলেন ভয়ে মাটিতে পড়ে যেতে নিলেন। দৌড়ে হাপাতে হাপাতে নিজের ঘরে এসে ঢুকলেন। সোফাতে বসে কিছুক্ষণ হাপাতে লাগলেন বড় বড় নিশ্বাস নিতে নিতে।

কি হয়েছে কি হয়েছে স্ত্রী ব্যাকুল ভাবে জিজ্ঞাসা করতে থাকে।

আমাদের অপসিট এর বাসায় কারা থাকে জানো?

আমাদের মত দুই ছেলে মেয়ে আছে ওরা বাইরে থাকে। স্ত্রী বলল।

একটা লোক সোফায় মরে পরে আছে রাহেলা বিভৎস দৃশ্য। সোফায় রক্ত। কাপতে কাপতে বললেন তিনি।

কি বল স্ত্রী চিত্কার দিলেন। আমি তো সকালে ভদ্র মহিলার সাথে কথা বললাম। তিনি দৌড়ে ওই বাসায় গিয়ে দেখার চেষ্টা করলেন।

না না খবরদার এখন ওই বাসায় যাওয়ার দরকার নাই। আল্লাহ জানে দরজায় মনে হয় আমার হাতের ছাপ পড়ে গেছে। কি হবে এখন বল তো ভয়ে আতঙ্কে তিনি বললেন।

কি একটা পাগল এত ভয় পাও কেন ?আমরা কিছু না করলে ভয়ের কি আছে। আমাকে একটু দেখতে দাও।

খবরদার খবরদার বলতেছি। তুমি ওই বাসায় যাবনা বলতেছি। তিনি প্যানিক এর মত করতে থাকেন।

করা টা স্বাভাবিক। তিনি যা দেখেছেন সাধারণ মানুষের জন্য বীভৎস ই বলা যায়। রক্তের স্রোতে বসে আছে একজন মানুষ। হাতে পিস্তল ধরা। চোখ মুখ আতঙ্কে বিস্ফোরিত।

দৃশ্য দুই

আনোয়ার আলিম বারান্দায় বসে চা খাচ্ছে। একটা ঘটনা আনোয়ার এর দৃস্টি আকর্র্ষণ করলো।
এই দেখ দেখ আলিম কে দেখানোর চেষ্টা করলো বারান্দা দিয়ে মাথা ঝুকিয়ে।

একটা লোক দৌড়াচ্ছে অস্বাভাবিক গতিতে। সন্দেহজনক সে বলল।

আলিম হাসলো বন্ধুর কোথায়। তার বন্ধু এখন সবকিছু তে সন্দেহজনক জিনিস দেখে। সারাদিন শার্লক হোমস এর গোয়েন্দা কাহিনী পড়ে আর নিজেকে মনে করে শার্লক হোমস। দুই বন্ধু মিলে ছোট দুইরুম এর বাসা ভাড়া নিয়েছে। লিভিং রুম টাকে বানিয়েছে তাদের অফিস। সাইন বোর্ড ঝুলিয়েছে শখের গোয়েন্দা আনোয়ার আর আলিম এর দপ্তর।
লিখা আছে আপনার যত মিস্ট্রিআস বা অস্বাভাবিক ঘটনার সমাধান আমরা ই করে দিতে পারি চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে। প্রথম কেস বিনামূল্যে দেখা হবে।

আনোয়ার এবং আলিম দুইজন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু সেই ছোটবেলা থেকে। যদিও দুইজনের চরিত্রে আকাশ পাতাল তফাত কিন্তু দুইজনের প্রগাড় বন্ধুত্বে কোনো ফাক নেই।

বন্ধুর কান্ড দেখে আর আলিম হাসে।

রহস্য উপন্যাস বানিয়ে ফেলবি নাকি নিজের জীবন নিয়ে।

এই হেন বন্ধু সব কিছু তে রহস্য খুঁজে।

এক লোক ক্লান্ত হয়ে দৌড়াচ্ছে বন্ধু তুমি তার মধ্যে রহস্য খুজতেছ।

তুই ভালো করে লোকটাকে খেয়াল কর। আনোয়ার উত্তেজিত হয়ে বলে।

তোর্ অবজারভেশন একেবারে ভালো না। তোরে সঙ্গী বানিয়ে তো আমার কোনো কাজে ই লাগবেনা। হতাশ হয়ে ক্ষনিক পরে আবার বলে।

আলিম হেসে চা খাওয়ায় মনোযোগ দেয়।

পরের দিন সকাল। দুইজন কাজে যাওয়ার জন্য বের হয়। তাদের পাশের বাসার সামনে অনেক পুলিশ এর গাড়ি। দুইজনে থমকে দাড়ায়।

এখানে তো আনিস ভাই থাকে। চল দেখি কি ব্যাপার।

কিছুক্ষণের মধ্যে শব্দ করে এম্বুলেন্স আসতে দেখা গেল। ভিতর থেকে স্ট্রেচার করে সাদা কাপড়ে ঢাকা একজন মানুষ গাড়ির ভিতরে ঢুকানো হলো।

কি হলো ভাই বাসার গার্ড কে জিজ্ঞাসা করলো আনোয়ার।

জানিনা ভাই আমার কপাল পুড়ছে।দোতলার করিম সাহেব খুন হইছে। পুলিশ বলতেছে ভাই আমি কিছু জানিনা। আমারে নাকি ওদের লগে যাইতে হইব।

দেখছিস আমি বললাম না। কালকে এইবাসায় কিছু একটা হইছিল। যেই লোকটারে দৌড়াইয়া যাইতে দেখছি কিছু একটা ছিল লোকটার মধ্যে।

বাদ দে থাকলে থাকুক। আমরা আমাদের কাজে যাই বলল আলিম।

তুই পাগল আমি আগে সব দেখব তদন্ত করব। তার পর যাব আনোয়ার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

তারা দাড়িয়ে আছে গেটের বাহিরে।পুলিশের লোক দারোয়ানকে টেনে হিচড়ে তাদের গাড়ীতে উঠাল।দারোয়ানটি হাউমাউ করে কাদছে।

আল্লাহর দোহাই আমি এই খুনের কিছু জানিনা হুজুর।আমার ছেলের কসম কাইটা কই।আমার বাচ্চাগুলোর জন্য আমারে দয়া করেন।না খাইয়া থাকব আমার পোলাপান।

আলিমের মন বেশ নরম।দারোয়ানের কান্নায় সেও সহানুভূতিশীল হয়ে পড়ল ।

এতক্ষন বিরক্ত হচ্ছিল আনোয়ার কেন এখানে সময় নষ্ট করছে এইভেবে।এখন সে ভাবল পুলিশগুলি বোকা আর নিষ্ঠুর দেখা যাচ্ছে ।পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে দারোয়ানটা বোকাসোকা। তারপর ও দয়া হচ্ছেনা এদের।

(চলবে )

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top