কাঁদো মা কাঁদো
কাঁদো মা কাঁদো
বরফ গলা নদীর মত, শ্রাবণ মেঘের আকাশের মত
গিরি কন্যা ঝরনা ধারার মত কাঁদো
কেঁদে কেঁদে গড়ে তোল চোখের জলের শিসমহল
মনে রেখো তবু কেউ তোমার কথা, তোমার পারিজাত সন্তানের কথা
ভুল করেও মনে করবে না,
এতটুকু ভালবাসার তুলিতে আঁকবে না কোন জলছবি !
কাঁটাতারের বেড়ার মত, গলায় বিদ্ধ কাঁটার মত তুমি চেয়ে চেয়ে দেখবে
উদোম বুকের ছাতিতে, উন্মুক্ত পৃষ্ট দেশে নূর হোসেনের সেই রক্ত লেখা !
কাঠের পুতুলের মত, ছাদনা তলার বদনার মত অন্ধ চোখে তাকিয়ে থাকা !
যদি পারো স্মৃতির মণি কোঠরে ফিরে যেও
যেখানে তোমার টিপু সুলতান উন্মুক্ত তলোয়ার হাতে এখনও দাঁড়িয়ে আছে !
তোমার শত্রুর বিরুদ্ধে, মানবতার শত্রুর বিরুদ্ধে
যৌবনের মৌ বনে লুকিয়ে থাকা ভীরু কাপুরুষদের বিরুদ্ধে !
তোমার অগণিত শহীদ সন্তানের বজ্র মুষ্টি এখনও সুকঠিন শপথের
সূর্য স্মারক । যে কোন সময় মহাকালের হাত ঘড়ি
টিক টিক করে বেজে উঠবে !
ঝাউয়ের বনে, ঘাসের মেলায়, শরত শিশির লুকিয়ে লুকিয়ে হাসবে
গলায় মাদুলি পড়া কিছু দিগম্বর শিশুর বাঁধ ভাঙা উল্লাসে
আবার ফিরে আসবে
তোমার আরব্য রজনীর গল্প, ঠাকুরমার ঝুলি !
তবু একদিন মরা গাঙে পানি পাওয়ার মত,
তোমার অবোধ সন্তানের বোধোদয় ঘটবেই
চেতনার বহ্নি শিখায় ক্ষমতার মোহ টুটবেই !
ততদিন তুমি যত পারো কাঁদো,
মায়ের চোখের জলে যদি সন্তানের চোখে জল আসে !
আর সেই জল ধুয়ে মুছে দেয় হৃদয়ের সকল আবর্জনা !