বৃষ্টি ক্ষমা করো আমায় ।
বৃষ্টি কোন অজুহাত ছাড়াই তোমার কাছে নিঃসংশয় ক্ষমা চেয়ে নেই । আমি জানি আমার এমন নির্ভাবনা তোমাকে কিছুটা অবাক করবে । আমার এমন স্বার্থপরতা তোমার কাছে অন্যায় ঠেকবে । তবু দূরে থাকলাম । তোমার শীতল স্পর্শ হতে নিজেকে দূরে রাখলাম । কি কারন কি অকারন সে তুমি নাই’বা জানলে । শুধু জেনে রেখ তোমাতে আমার কোন শূচিবায়ু নেই । এমনকি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ভয়ও নেই ।
একটা সময় ছিল যখন তোমার শীতল পরশে নিত্য স্নান নিতাম । কাদামাঠে বল নিয়ে কাটিয়ে দিতাম ঘন্টার পর ঘন্টা । সমস্ত পথ হেঁটে বেড়াতাম তোমায় মাথায় নিয়ে । জ্বর সর্দি সে আসতো বৈকি । কিন্তু তাতে কি ? এসব দেখা’তো সুরেশ ডাক্তারের কাজ ছিল । আমায় অতসব ভাবতে হতো না । শুধুমাএ চিমটি কেটে দু’চারটা দিন কাটিয়ে দিলেই হতো । তারপর আবার ফিরে আসতাম তোমার স্নেহধন্য কোলে । আমার এমন নিত্য আনাড়ি দেখে অসুখ ব্যাটাও বিরক্ত হয়ে উঠত । তাই রোজ রোজ আমার দেহে ভর করা ছেড়ে দিয়ে নিজেকে রক্ষে দিত । আমিও মহাআনন্দে তোমাকে খুঁজতে বেরিয়ে পরতাম । দু’হাত তুলে তোমাকে খুঁজতাম । চোখ খুলে চোখ বুঁজে খুঁজতাম । দু’হাত ছড়িয়ে শূন্যে দৃষ্টি রেখে তোমার ফোঁটা ফোঁটা স্পর্শ নিতাম । বাড়ী ফিরে মায়ের বকুনী খেতাম ।
আজ আমার অবাধ স্বাধীনতা । মায়ের বকুনী খাওয়ার ভয় নেই । বাবার ধমক খাওয়ার সুযোগ নেই । সুরেশ ডাক্তারকে ছেড়ে আজ বড় বড় ডাক্তারের কাছে বাস । তবু বৃষ্টিতে আপওি । একান্তই কাঠফাঁটা রোদে জীবন অসহ্য না ঠেকলে বৃষ্টির প্রার্থনা করা হয় না । সময়ের আশ্চর্য বির্বতন । এক জীবনে রোদ জল বৃষ্টির সময় নির্দিষ্ট রূপান্তর । আজ ভাবি সকালের বৃষ্টিতে অফিস যেতে সমস্যায় পড়ব । বিকেলের বৃষ্টিতে বাসায় ফেরা কষ্ট হবে । ছুটির দিনের বৃষ্টিতে বাজার কাদাময় হয়ে উঠবে । আমার অভিযোগের আর শেষ নেই । আজকালকার বৃষ্টি দেহে শীতল পরশ দেয় না । দেহে মাতম তুলে না । তাই বড় কায়দা করে বৃষ্টির ফোঁটাকে এড়িয়ে চলি । কি আশ্চর্য । কি নিয়মিত রূপান্তর আমার ।
Time! Very surprising time ! সময় ! কি আশ্চর্য সময় !
বৃষ্টি ক্ষমা করো আমায় ।
………….নিঃশব্দ নাগরিক ।