পৃথিবীর যত সুখ মায়ের কোলে
খোকাবাবু রাগ করে ছেড়েছে বাড়ি
টাকা নেই পকেটে, চড়েছে গাড়ি
টিটি এসে বলে, ‘ভাই দেন তো টিকেট’
হাতিয়ে মাতিয়ে বলে, ‘কেটেছে পকেট!’
চোখ তুলে কপালে টিটি সাব ক‘ন
‘বলেন কি ভাইসাব, কেটেছে কখন?’
বাড়িছাড়া খোকাবাবু রেগে মেগে চুপ
আহারে আহারে বাছা, মায়া লাগে খুব।
যাবে কোথা খোকাবাবু নাই তার দিশ
ক্ষুধাতুর খোকা বাবু করে নিসপিস।
ষ্টেশানে ষ্টেশানে গাড়ি থেমে থেমে যায়
উদাসীন চোখ মেলে বাহিরে তাকায়।
যায় গাড়ি যত দূরে কান্না আসে
একটিও চেনা মুখ নাই যে পাশে
বারবার মনে পড়ে বকুনি মায়ের
ডাকে বুঝি ছোট ভাই আবুল খায়ের।
ক্ষুধাতুর খোকাবাবু মনে মনে কয়-
মাগো তুমি কত দূরে, লাগে মনে ভয়!
গাড়ি যে থামে না আর চলে গড় গড়
পেছনে ফেলে রেখে চেনা বাড়ি ঘর।
মন তার কেঁদে ওঠে বাড়িতে যাবার
মায়ের আদর আর মেলেনি খাবার।
পাড়ার লোকেরা সব খুঁজে হয়রান
কেঁদে কেঁদে খোকাবাবু করে অভিমান।
দেশ ঘুরে রেলগাড়ি ফিরেছে গ্রামে
জবুথবু খোকাবাবু কষ্টেতে নামে
ভিড় ঠেলে মা এসে খাবলে ধরে-
’কোথা ছিলি বাবা তুই, পাই না তরে!’
ক্লন্তির রেশ দেখে খোকার চোখে
এটা ওটা পুরে দেয় ছেলের মুখে
মাকে পেয়ে সব ব্যথা গিয়েছে ভুলে
পৃথিবীর যত সুখ মায়ের কোলে।