নরকের দরজা
তুর্কমেনিস্তানের ড্রাভা শহরে রয়েছে একটি জ্বলন্ত গর্ত। সবার কাছেই এই জ্বলন্ত জায়গাটি ‘ডোর টু হেল’ নামে পরিচিত। রাতের বেলা নরকের এই দরজাটি খুবই সুন্দর লাগে। তখন অনেক দূর থেকেই জায়গাটা তো দেখা যায়ই, এর শিখার উজ্জ্বলতাও ভালোমতো বোঝা যায়। সেখানকার উত্তাপ এত বেশি যে, কেউ চাইলেও ৫ মিনিটের বেশি সেখানে থাকতে পারে না।
১৯৭১ সাল থেকে জায়গাটি অবিরত দাউদাউ করে জ্বলছে। কারাকুম মরুভূমিতে অবস্থিত অগ্নিমুখটির ব্যাস ৭০ মিটার ও গর্ত ২০ মিটার দীর্ঘ, যদিও এটি প্রাকৃতিক কোনো গর্ত নয়। ১৯৭১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ দারউয়িজি এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানের সময় অনুসন্ধানকারীরা গ্যাসবহুল গুহার মধ্যে মৃদু স্পর্শ করলে দুর্ঘটনাক্রমে মাটি ধসে পুরো ড্রিলিং রিগসহ পড়ে যায়। পরিবেশে বিষাক্ত গ্যাস প্রতিরোধ করার জন্য ভূতত্ত্ববিদরা তখন গ্যাস উদ্গিরণ মুখটি জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তারা আশা করেছিলেন, এর ফলে কয়েকদিনের মধ্যে গ্যাস উদ্গিরণ বন্ধ হবে, কিন্তু তা আর হয়নি। ৪০ বছর ধরে অগ্নিমুখটি অনবরত জ্বলছে। ১৯৭১ সালে এখানে গ্যাস খনির সন্ধান মেলে। প্রাথমিকভাবে গবেষণা করে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত হন, যার পরিমাণ ছিল সীমিত। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এই গ্যাস জ্বালিয়ে শেষ করা হবে। ফলে এর বিষাক্ততা ছড়ানোর সুযোগ পাবে না। এরপর এখানে গর্ত করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু গবেষকদের অবাক করে দিয়ে তা এখনো অর্থাৎ ৪০ বছর ধরে একাধারে জ্বলছে অথচ গবেষকরা নিশ্চিত ছিলেন যে, অল্প কয়েক দিনের মধ্যে এই গ্যাস শেষ হবে এবং আগুন নিভে যাবে।