Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

সত্তরের কথা (শেষাংশ)

: | : ০৫/০৯/২০১৩

(আমার গতকাল পোস্ট করা গল্পের শেষাংশ)

ক্লাস নাইনের রেজাল্ট বেরোল সে দিন। কলি ভালভাবে পাশ করে গেছে। পঞ্চু দু বিষয়ে ফেল করল। স্কুল কর্তৃপক্ষ দু বিষয়ে ফেল ছাত্রদের কম্পার্টমেন্টাল পরীক্ষার সুযোগ দিলো। সে বার ক্লাস নাইন কোন মত সে পাস করে গেল।

সে দিন রাতের কথা। নেশা করে পঞ্চু ফিরছিল ঘরের দিকে, পথে কলির সঙ্গে দেখা হল। কলি নীরবে পঞ্চুকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল। পঞ্চুর ভালো লাগলো না, ও কলিকে ডেকে উঠলো, কলি, শোন !

থমকাল কলি, ভাবল দাঁড়াবে কি না। ততক্ষণে পঞ্চু কলির কাছে এগিয়ে এসেছে। বলল, বাঃ, খুব সুন্দর হোয়ে উঠেছিস তো তুই !

–এ কি কথার ছিরি পঞ্চানন দা ! তুমি নেশা করেছ, তুমি দিনকে দিন–

–হ্যাঁ, তাতে তোর কি ? আমি নেশা করি, আমি চুরি করি, আমি ডাকাতি করি তো তোর কি  ?

–আমার কিছু না, বলে কলি হাঁটা দিচ্ছিল।

পঞ্চু বলে উঠলো, কোথায় যাচ্ছিস তুই? কলির পথ আটকে ধরল ও।

–আমায় যেতে দাও পঞ্চুদা, সরে যাও আমার রাস্তা থেকে।

–না, আমি সরবো না, তুই কি করবি বল !

–লোকজন এসে পড়বে পঞ্চু দা ! তুমি রাস্তা থেকে সরে দাঁড়াও।

নেশায় পঞ্চু তখন সামান্য টলছে, বলে উঠলো, ছাড়বো না কলি আমি, আমি, আমি তোকে ভালোবাসি। তোকে–বলে কলিকে জড়িয়ে ধরল। কলি কোন মত নিজেকে ঝাপটা মেরে ছাড়িয়ে হন হন করে ঘরের দিকে হাঁটা দিলো।

মনটা খারাপ হোয়ে গিয়েছিল পঞ্চুর। কলি আজকাল ওকে ভালোবাসে না ! মাঝে মাঝে ওর মনে হয়েছে আবার যদি ও পড়া শুনা করে, আবার তবে ভালবাসবে কলি তাকে !

এর পর কেটে গেল অনেকগুলো দিন। সময়ের ফুরসতে কি মনে হল, পঞ্চু একবার মেট্রিক পরীক্ষায় বসে পড়ল। প্রাইভেট ক্যান্ডিডেট হিসাবে। কখনো এম.এল.এ.বা মন্ত্রী তন্ত্রীর চান্স যদি ভাগ্যে লেগে এসে যায়, তবে এই কোয়ালিফিকেশন কাজে দিতে পারে।

পরীক্ষায় তো বসবে, কিন্তু পড়াশুনা ! তার কি হবে ? মনুদা অভয় দিয়ে ছিল ওকে, বই পত্র নোটটোট সব যোগার করে নিস। পরীক্ষার হলে সব নিয়ে পৌঁছাবি।

–নকল ! হেসে ছিল পঞ্চু।

–হ্যাঁ, সঙ্গে চাকু নিতে ভুলবি না, গার্ডদের  আগেই ভয় দেখিয়ে রাখবি। দেখবি তুই শিক্ষিত, মেট্রিক পাস বনে গেছিস।

আর উপদেশের দরকার হয় নি। শুরুর দিন ইংরাজি পরীক্ষা চলছিল। পঞ্চু প্রকাশ্যে তার ডেস্কের উপর রেখে দিলো ইংরেজি সাবজেক্টের সব বইগুলি। ওদের স্কুলের ইংরেজি টিচার, হর বাবুর ইনভিজিলেটর হিসেবে ডিউটি ছিল। তিনি পঞ্চুর কাছে এসে বললেন, বাবা! বইগুলো বাইরে রেখে আসো।

পঞ্চু কথা বলল না, সটান স্যারের পা ধরে প্রণাম করল, তারপর বলল, স্যার, আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না। আমাকে পাশ করতে হবে, কথা কটা বলে পকেট থেকে হাত খানেক বড় চুরি বের করে ওর ডেস্কে একেবারে দাঁড় করিয়ে গিঁথে রাখল। স্কুলের হেড মাস্টার ওর পাশে এসে দাঁড়ালেন, দেখো এভাবে পরীক্ষা দেওয়া যায় না।

অন্য স্কুলের হেড মাস্টার, পঞ্চুর অচেনা ছিল।পঞ্চু বেলে উঠলো, স্যার, আমায় ডিস্টার্ব করবেন না।

–এভাবে চলবে না, বললেন হেড স্যার।

–তবে কি ভাবে চলবে স্যার? একটা দুটোর পেটে চাকু ঢুকিয়ে দিলে?

এমনি সময় পঞ্চুর দলের উজান, বান্টি পরীক্ষার হলের দরজার সামনে থেকে হুমকি দিয়ে বলে উঠলো, এই যে স্যার, ওকে পরীক্ষা দিতে দিন। না হলে আমরা পরীক্ষা বন্ধ করে দেব।

রীতিমত ধমকি দেবার পর পঞ্চু নিশ্চিন্ত মনে বই খুলে পরীক্ষা দিয়ে গেলো। কেউ তার দিকে এগোতে সাহস পেল না।

কিন্তু তাতে কি হল ! পঞ্চুর ভাগ্যটাই যে খারাপ ! ও বুজতে পারে না, খাতায় এত কিছু লিখে আসার পরও, শালা, কি করে ও ফেল করল !

 

কলির সঙ্গে আরও একদিন দেখা হয়েছিল পঞ্চুর। তার অনেক আগে থেকেই সে দাদার দলে যোগ দিয়েছে। জীবনের সেন্টিমেন্ট ব্যাপার গুলোর উপচার করে দাদার দলে নাম লিখিয়েছে। বুড়োর গলা টিপে মারার পরীক্ষা তার অনেক দিন আগেই হোয়ে গিয়ে ছিল।

তখন সন্ধ্যে হয় হয়, কালনার পুরনো বাস স্ট্যান্ডের পেছন দিকে তখন কিছু জাগা জঙ্গলে ঘেরা ছিল। মেয়েলী কণ্ঠের চীত্কার শুনে পঞ্চু জঙ্গলের দিকে এগিয়ে গেলো। দেখল একটা মেয়ের সঙ্গে জবরদস্তি করছে কোন ছেলে। এ সব ডাল ভাত দৃশ্য বটে, নজর না দিয়ে নিজের পথের দিকে পা বাড়াচ্ছিল ও। এমনি সময় মেয়েটির চীত্কার কানে বাজলো তার।

গলাটা চেনা লাগছে না ! কলির গলার স্বর না তো? সামান্য নেশা যেন ছুটে গেল তার। দু চার লাফে সে আবার জঙ্গলে ঢুকে পড়ল।  দেখল ছেলেটা মেয়েকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেছে। আরও কাছে এগোল পঞ্চু। মুখ নিচু করে উঁকি মারল মেয়েটির ওপর। একি! এযে কলি !

–পঞ্চানন দা, মেয়েটির গলা থেকে চীত্কার বেরিয়ে এলো।

পঞ্চু কোন কথা বলল না, হাঁটুর নিচ থেকে,প্যান্টের ভাঁজ থেকে হাত খনেক বড় ছুরি বের করল, আর নিঃশব্দে ঢুকিয়ে দিলো কলির ওপর চেপে থাকা ছেলেটার পেটে।

স্তব্ধতা চিড়ে কান ফাটা এক আর্তনাদ বের হল। সে নাদ বাতাসে মিলিয়ে যাবার আগেই পঞ্চু পেটে বেঁধা ছুরি টেনে তুলে ঘপাঘপ আরও দু তিনবার বসিয়ে দিলো ছেলেটার বুকে, পিঠে।

কলি সে দিন নষ্ট হতে পারে নি। পঞ্চু খোঁজ নিয়েছিল, এবারের অচুক কাজ ওকে পদোন্নতি এনে দিলো। মনুদার কাছ থেকে সে পেল এক জোরা লোডেড-পিস্তল।

এরপর ঘ্যাঁচাঘ্যাঁচ কত জনকে কাটল ! কত জনের শরীরে বিঁধল পঞ্চুর গুলি–সে হিসাব কেউ রাখে নি !

সমাজে ওর নাম হয়ে গেলো। পাড়ায় প্রতিপত্তি হয়ে গেলো। ওর কথার অনেক ওজন হয়ে গেলো। লোকে সমীহ করে, ভয় পায়, ও কথা বললে সবাই শোনে। তার মানে সে ছোট খাট নেতাই বনে গেল বলতে হবে!

পঞ্চু একদিন এম.এল.এ., মনুদার বডিগার্ড হয়ে গেলো। মনুদার নিজের জীবনের ভাবনা নেই, যেখানে দুর্ধর্ষ পঞ্চু তার বডিগার্ড। নির্ভাবনায় রাতে বিরাতে ঘোরা–কোন কিছুতে ফিকির নেই–নো পরোয়া–ডু ফুর্তি !

বস্তুত রাজনীতি দলের বেশীর ভাগ দাদারা এসেছে ষণ্ডাগুণ্ডা দল থেকে, আর তাদের চারদিক দিকে শত্রু গুণ্ডাদের কমি নেই। এ জাতীয় অন্য ষণ্ডাগুণ্ডা দাদারা বর্তমান দাদাদের নাশ করে তার স্থান জুড়তে চাইবে এটাই তো স্বাভাবিক ! মনুদার যেমন গুণ্ডার  দল আছে, তেমনি দিনে দিনে গুণ্ডা নেতারা গজিয়ে উঠছে। কে কখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে কেউ বলতে পারে না। চতুর্দিকে তাই দাদাকে বাঁচাবার জন্যে নজর রেখে চলতে হয়।

পঞ্চু শুনেছে মনুদার নাকি মন্ত্রী হয়ে যাবার চান্স আছে। দাদার পেছন পেছন পঞ্চুর সব জাগাতেই যেতে হয়, সভা হল তো মনুদার ডাক পড়বে, পার্টি হল তো মনুদার ডাক পড়বে। গোটা কালনা শহরে মনুদার নাম এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে।

পঞ্চুর মনে হয় সেও যদি এমন এগিয়ে যেতে পারত ! মনুদার মত অন্তত: মেট্রিক মাস করতে পারত, বক্তৃতা দিতে পারত। মনুদা সুন্দর বক্তৃতা দেয়, সুন্দর সুন্দর কথা সাজিয়ে খই ফোটার মত চট চট করে কেমন ফুটন্ত কথা বলে ! সাধারণ লোক মজে যায়। মনুদার প্রশংসায় পঞ্চ মুখ হয়ে, মনুদা জিন্দা বাদ, বলে ওঠে !

সেদিন একটা ছেলে এলো পঞ্চুর কাছে। ছেলেটা সাদাসিধা মত চেহারার। পঞ্চু লক্ষ্য করল ছেলেটাকে, না, নিরীহ বলে মনে হচ্ছে। তবু এগিয়ে গিয়ে ওর বুকে হাত ঠেকাল ও, কি ব্যাপার, কোথায় যাচ্ছিস তুই?

–পঞ্চু দা তোমার সঙ্গে জরুরী কথা আছে, ছেলেটা বলে উঠলো, আমি হর্ষ, আমার দিদি, কলি।

–আরে হর্ষ, তুই ! কি কথা বল, পঞ্চু স্বাভাবিক বলে উঠলো।

–দিদি কাল রাতে বাড়ি ছিল না, কাল রাতে দুটো ছেলে এসে ওকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। আজ খুব সকালে কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ফিরেছে।

–কি হয়েছে, কি হয়েছে তোর দিদির ? উত্তেজিত পঞ্চু বলে উঠে।

–আমি তো জানি না, এখনো কাঁদছে, সকাল থেকে কিছু খায় নি! আমায় তোমাকে ডেকে নিয়ে যেতে বলেছে, হর্ষ কথাগুলি বলে গেলো।

–তুই যা আমি আসছি, পঞ্চুর ব্রক্ষ্মতালু পর্যন্ত যেন গরম হয়ে গেলো। কলির ওপর কেউ জবরদস্তি করেছে! ওকে কেউ রেপ করেনি তো ! মাথা দিয়ে পঞ্চুর আগুন বের হতে লাগলো। মনে মনে ও বলে উঠলো, শ্লা, চিনিস না পঞ্চুকে। যে হোস তুই, টুকরো টুকরো করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেবো।

পঞ্চু বড় বড় পা ফেলে চলল তার বাইকের দিকে। দলের তরফ থেকে এই বুলেট গাড়িটা ও পেয়েছে। যেখানেই যাক ওটাই তার বাহন ! প্রায় আশি নব্বই স্পীড নিয়ে গুম গুম শব্দ করে হর্ষের আগে ও পৌঁছে গেলো কলিদের বাড়িতে।

কলি দরজা জানালা বন্ধ করে অন্ধকার ঘরে বসে ছিল। কান্নার সুর নিয়ে বলে উঠলো, পঞ্চানন দা, শোনো ! বুট শুট পরিহিত পঞ্চু সোজা ঢুকে গেলো কলির ঘরে। শরীরকে একদিকে টেরি কাটে ঝুঁকিয়ে টান টান দাঁড়িয়ে কলিকে জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে রে ?

কলি কান্নায় ভেঙে পড়ল,  পঞ্চুর পায়ের কাছে পড়ে ও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো, আমায় নষ্ট করেছে তোমার দলের দাদা।

মাথা ঘুরে গেলো পঞ্চুর, কোন দাদা? বলে, চীত্কার করে উঠলো ও।

–ওই তোমার মনুদা, কালকে দুটো ছেলে পাঠিয়ে মিথ্যা কথা বলে আমায় নিয়ে গেছে।

–তুই জানিস, তাও গেলি কেন ? প্রায় চীৎকার দিয়ে উঠল পঞ্চু।

–চাকরি দেবে বলে ডেকে ছিল তোমাদের ওই মনুদা !

মাথায় রক্ত টগবগ করে ফুটছে পঞ্চুর। প্যান্টের দুদিকের পকেটে হাত দিয়ে দুটো পিস্তল ছুঁল সে। তেমনি দৃঢ় সোজা হোয়ে দ্রুত গতিতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।

কলি তাকে বুঝতে পারেনি, বলতে পারে নি মাথা ঠাণ্ডা রাখতে–বদলা নাও কিন্তু নিজেকে বাঁচিয়ে। মনের সব কথা কলির মনেই থেকে যায়। দুঃস্বপ্নের ঘোর নিয়ে অন্ধকার ঘরে চুপ করে ও বসে থাকলো। জানে না সে সময়ের ভবিষ্যৎ তাকে কোথায় নিয়ে  যাবে! মনুর মিটিং চলছিল। তার মধ্যেই তার মনে হচ্ছিল, কাল রাতের ভোগ করা মেয়ে কলি, যাকে সে ভোগ করেছে, এক সময় সে নাকি পঞ্চুর মাল ছিল। এসব লাইনে বাঁধাধরা কিছুই থাকে না, তলে তলে কারো প্রতি টান থাকলেও তা ক্ষণস্থায়ী। কর্পূর হয়ে উবে যায় তার গন্ধ, মোহ! তবু মনুর মন এক জাগায় খচ করে উঠেছিল যখন জানতে পেরে ছিল কলি মেয়েটা পঞ্চুর লাভার ছিল। কিন্তু তখন আর কিছু ভাবার ছিল না, সব কাণ্ড জবরদস্তি শেষ হয়ে গিয়েছে–কলিকে ডাঁসা হয়ে গেছে।

মনুর মনের কোণে সূক্ষ্ম কোন কাঁটা সময়ে অসময়ে বিঁধছিল। ভয় হচ্ছিল বডি গার্ড, পঞ্চু এক রোখা ছেলে। অচতুর, প্রেমিকার নষ্ট শরীরের মানসিকতায় ও যদি তাল ভঙ্গ করে ! তবে? তাই সে আজের রাতের মিটিংয়ের কথা পঞ্চুকে জানায় নি। বান্টিকে বডি গার্ড বানিয়ে মিটিং এটেন্ড করবে ঠিক করল মনু।

সে মিটিংয়ের শেষ পর্যায় চলছিল তখন। রাত দশটা পার করে ঘড়ির কাঁটা এগারতে ছুঁই ছুঁই করছিল।

পঞ্চুর কিছুই অজানা ছিল না। মিটিং হলের বাইরে এক অন্ধকার জাগায় চুপ করে দাঁড়িয়েছিল। বারবার তার হাত দু দিকের পেন্টের পকেটে রাখা দুই পিস্তল  ছুঁয়ে যাচ্ছিল। কলিদের ঘর ছেড়ে আসা থেকে সে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সুযোগের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

মনু ! দাঁতে দাঁত ঘষল পঞ্চু। তুই আজ বান্টিকে নিয়ে গেছিস। তুই জানিস, তুই অপরাধী, আর তার শাস্তি কি সেটা কি তুই আন্দাজ করতে পারছিস !

মিটিং হল থেকে বেরোবার সঙ্গে সঙ্গে মনুর বডিগার্ড বান্টি, সঙ্গে হাবুল, ঝন্টু, কালু সবাই মনুকে ঘিরে রেখেছে। আজ চার চারটে শাগরেদ তাকে গার্ড দিয়ে ঘিরে ঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

তবু আমি তোকে ছাড়ব না মনু ! তুই এম.এল.এ.,মন্ত্রী হতে চলেছিস। নিজের দলের লোকের সঙ্গে নিমক হারামি করেছিস রে তুই! পঞ্চু দাঁতে দাঁত চাপল, তারপর ঝট করে দু হাত প্যান্টের দু পকেটে ভরে দুটো পিস্তলই বের করে নিলো–সোজা তাক করে নিলো মনুর শরীর–দুম, দুম, দুম, পরপর তিনটে গুলি ছুটে গেলো পঞ্চুর পিস্তল থেকে।

ও দিকে দু তিনবার আকাশ ফাটা চীত্কার শোনা গেলো। দুপ দাপ ছত্র ভঙ্গ, ছোটা ছুটির পদ শব্দ হল।

পঞ্চু দৌড়চ্ছে, ওই যে ও পালাচ্ছে। ওই যে অন্ধকার রাস্তায় ছুটে যাওয়া তার প্রকাণ্ড কালো ছায়া তার পিছু নিয়েছে !

তারপর শব্দের মহড়ায় এক ঝাঁক গুলির বৃষ্টি এসে ঝরল পঞ্চুর দিকে। পঞ্চুর প্রাণ ফাটা চীত্কারের  আওয়াজ, গুলির ধোঁয়া উড়ে যেতে থাকলো আকাশের দিকে।

সকালের রোদ্দুরে পড়ে আছে তিনটি মৃত দেহ। একদিকে বান্টি আর ঝন্টুর, আর কিছু পথ এগিয়ে বড় পিচ রাস্তার ওপর পড়ে আছে পঞ্চুর মৃত দেহ। ১৯৭০ সালের সে সব ঘটনার প্রেক্ষাপটে মৃত লাশ নিয়ে ট্রাক ছুটে চলেছে কোন অনামিত স্থানে।

সমাপ্ত

 

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top