Today 12 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

বন্ধুর মাংশ খেয়ে জীবন ধারাণ

: | : ১৭/০৯/২০১৩

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা বিপর্যয় কোনটি? ইতিহাস ঘেঁটে অনেক কিছু জানা গেলেও ১৯৭২ সালে ১৩ অক্টোবর আন্দিজ পর্বতমালার প্লেন দুর্ঘটনাটিকেই এখন পর্যন্ত সেরা বিপর্যয় হিসেবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের পর্বতের ১ লাখ ১৮ হাজার ফুট উঁচুতে ঠাণ্ডা থেকে নিজেদের ৭২ দিন রক্ষা করার জন্য কিছু ছিল না। তাদের কাছে থাকা স্বল্প কিছু খাদ্য এক সময় ফুরিয়ে যায়। তারা প্লেনের সিট, যন্ত্রপাতির পাশাপাশি মৃত বন্ধুদের মাংস খাওয়া শুরু করে। ৭২ দিনের টিকে থাকার এই চরম যুদ্ধে তাদের নেতৃত্ব দেন নান্দো প্যারাডো ও রবার্তো কানেজা।

১৯৭২ সালের ১৩ অক্টোবরের আন্দিজ ট্র্যাজেডি নিয়ে ১৯৭৪ সালে প্রথম বই লেখেন পিয়ার্স পল রিড। তিনি দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বইটি লেখেন। বইটির নাম এলাইভ : দি স্টোরি অব আন্দিজ সারভাইভারস। ২০০৫ সালে বইটি পুনর্মুদ্রণ করা হয়। এরপর ২০০৬ সালে এই বিষয়ে বই লেখেন বেঁচে যাওয়া যাত্রী নান্দো প্যারাডো। বইটির নাম মিরাকল ইন দি আন্দিজ ৭২ ডেইজ অন মাউনটেইন অ্যান্ড অন মাই ট্রেকিং, এই বই উৎসর্গ করা হয় দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া যাত্রীদের নামে। সেই সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি যাত্রীর ভাবনা এই বইয়ে  লেখা  হয়েছে। নান্দো প্যারাডোর বইয়ে উল্লেখ রয়েছে কীভাবে এক একজন যাত্রী দুর্ঘটনায় ক্ষত, অন্ধত্ব নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছিল।

এবারে জানা যাক সে দুর্ঘটনার আসল খবর, ১৯৭২ সালের ১৩ অক্টোবর উরুগুয়ের ফেয়ার চাইল্ড বিমানের যাত্রীরা যাচ্ছিলেন চিলির সান্টিয়াগোর উদ্দেশে। মন্টেভিডিওর একটি ওল্ড ক্রিশ্চিয়ান রাগবি টিমের খেলোয়াড়রা ছাড়াও তাদের আÍীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধব ছিলেন সেই বিমানে। বিমানের ক্রু-পাইলটসহ মোট যাত্রী ছিলেন ৪৫ জন। বিমানটির ক্রাসকো ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা। কিন্তু বিমান উড্ডয়নের পর আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়, আকাশ ধোঁয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। পাইলট আর্জেন্টিনার মেন্ডোজা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বিমানটিকে চিলির পাশ দিয়ে ঘুরিয়ে মেন্ডোজা বিমানবন্দরের দিকে নিতে চাইলেও পারছিলেন না। ঝড় ও কুয়াশার কারণে পাইলট কোনোভাবেই বিমানকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বিমানটি আর্জেন্টিনা ও চিলির সীমান্তবর্তী আন্দিজ পর্বতমালার মধ্যবর্তী দুর্গম স্থানে একটা øো ব্যাংকে ক্র্যাশ করে। এই দুর্ঘটনায় তিন ভাগের দু’ভাগ যাত্রী মারা যায়। এ নিখোঁজ বিমান উদ্ধারের কাজ করেছে আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে এবং চিলি। খারাপ আবহাওয়ার জন্য ১১ দিন উদ্ধার কাজ বন্ধ ছিল। বিমানটি ২৩ ডিসেম্বর যখন উদ্ধার হয় তখন মাত্র ১৬ জন যাত্রী বেঁচে ছিল। তাদের জীবনে ততদিনে ঘটে গেছে লোমহর্ষক দুর্বিষহ ভয়াবহ সব ঘটনা। যা কোনো গল্প বা সিনেমাকেও হার মানায়। পাহাড়ি ঝড়ের কারণে আকাশ ধোঁয়াশাচ্ছন্ন ছিল। ফলে বিমানটি ক্র্যাশ করার সময় মনে হচ্ছিল আকাশ থেকে বিমানটি উধাও হয়ে গেছে। আকাশে বিমানটির কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিমানের সঙ্গে রেডিও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top