Today 12 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

হোল ইন দ্য ওয়াল

: | : ১৭/০৯/২০১৩

1

‘হোল ইন দ্য ওয়াল’ মূলত একটা গুহা যা ‘কলোসাল কেভ’ নামেও পরিচিত। রিনকন পর্বতে অবস্থিত এই গুহাটি ছিল খুবই সুরক্ষিত জায়গায়। পানি আছে, সে সঙ্গে প্রচুর খাবার-দাবার মজুত করার জায়গাও আছে। ঠিকঠাক পাহারা দিলে কয়েক সপ্তাহ ধরে অবরোধ করলেও কোন লাভ হবে না। এক চালাক আউট’ল দল ঠিক করল এই গুহার যথাযথ ব্যবহার করবে।

১৮৮৪ সাল। সাউদার্ন প্যাসিফিক রেলওয়ের একটি ট্রেনে ডাকাতি হলো। ডাকাতের দল ট্রেনে থাকা ৬২ হাজার ডলার লুট করে নিয়ে গেল। তারপর আশ্রয় নিল ‘হোল ইন দ্যা ওয়াল’ গুহায়। কাছের শহরের শেরিফের নেতৃত্বে আইনের লোকেরা ৩ সপ্তাহ ধরে অবরোধ করে বসে রইল গুহার মুখে। কিন্তু ডাকাতের দল ধরা দিল না।

যে কোনো বিচারেই তিন সপ্তাহ অনেক সময়। আউট’লয়ের দল দেখল যে এই শেরিফ নাছোড়বান্দা। তাই তারা বিকল্প পথে গেল। তাদের জায়গা বাছাইটা সত্যিই পারফেক্ট ছিল কারণ ‘হোল ইন দ্যা ওয়াল’ এর একটা গোপন পথ ছিল বের হওয়ার। পথটা হচ্ছে ঢোকার মুখ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে, গুহা থেকে আরো ৪০ গজ উপরে ক্যাকটাসে ছাওয়া সরু একটা চিমনির মতো মুখ। সেখান দিয়ে লুটের মাল নিয়ে ৪ ডাকাত বের হয়ে গেল অবরোধকারী শেরিফের অজান্তে। একে তো এতগুলো টাকা সফলভাবে লুট করার আনন্দ, তার সঙ্গে ধাওয়াকারী শেরিফের কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া। আউট’লরা নিজেদের আর ধরে রাখতে পারল না। কাছের ছোট শহর উইলিকক্সে গিয়ে মদ খাওয়ার উৎসবে মেতে উঠল।…এবং সেটাই কাল হলো তাদের। কেউ একজন গিয়ে খবর দিল গুহার মুখে তখনো অপেক্ষায় আছে শেরিফের বাহিনী। আর যায় কোথায়? রুদ্ধশ্বাসে তারা ছুটল উইলিকক্সের দিকে। ৪ ডাকাতের ৩ জন ঘটনাস্থলেই গুলি খেয়ে মারা গেল। বেঁচে যাওয়া একমাত্র আউট’ল ফিল কার্ভারকে বিচারের মুখোমুখি করা হলো।  ২২ বছরের যুবক কার্ভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক কথাই বলে গেলÑসে গুহার  মুখ পাহারা দিয়েছে। তার অপর ৩ সহযোগী  লুট করা সোনা কোথায় লুকিয়েছে তা সে জানে না। শেষ পর্যন্ত বিচারক তাকে ২৮ বছরের সাজা দিলেন।

2

ইউমার জেল থেকে ফিল কার্ভার ছাড়া পেল ১৮ বছর পর, ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তক্কে তক্কে ছিল। ছাড়া পাওয়া মাত্র তার পেছনে লোক লাগানো হলো। কিন্তু কার্ভার ঘাগু লোক, ১ সপ্তাহ পরেই তার আর কোনো হদিস পাওয়া গেল না। বেশ কিছু গুজব এদিক-ওদিক থেকে শোনা যেতে লাগলÑকেউ বলে তাকে মেক্সিকোতে দেখা গেছে, আবার কেউ বলে ইংল্যান্ডে। কিন্তু কিছুদিন পরেই খবর এল তাকে টাকসনের উত্তরে রিংকন পাহাড়ের কাছে শেষ দেখা গেছে, অর্থাৎ সেই পুরনো ডাকাতির জায়গার কাছাকাছি। পুলিশ হন্তদন্ত হয়ে ছুটল। ‘হোল ইন দ্যা ওয়াল’ এর ১২০ ফুট লেভেলে গিয়ে পাওয়া গেল কেবল ৩টা খালি ক্যানভাসের ব্যাগ। ভেতরের সোনা হাওয়া! কার্ভারের টিকিরও কোনো খবর নেই।

ঐতিহাসিক এই গুহা এখনো প্রায় আগের মতোই আছে। তবে ১৯২০ সালে এক মৃদু ভূমিকম্পে গুহার বের হওয়ার পথটা আংশিক বন্ধ হয়ে গেছে। লুই লামুরের লেখা ‘ফ্লিন্ট’ নামের উপন্যাসে ‘হোল ইন দ্যা ওয়াল’-এর উল্লেখ আছে।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top