ছোটখাট আনন্দ ভ্রমণ………..
ঋতু আর লিমা ওরা আমার অনলাইন ফ্রেন্ড । ওদের সাথে আগেও আমার মিট হয়েছে । ওরা আমাকে অনেক পছন্দ করে এবং আমিও তো অনেকদিন যাবত ওদের সাথে দেখা হয় না । তাই ফোন করে বললাম একদিন আস আবার দেখা করি । ঋতু বলল আপু তাহলে আমাকে অফিস থেকে ছুটি নিতে হবে । ইশ তুমি যদি শুক্র বা শনিবারে আসতে তাহলে সারাদিন ঘুরাঘুরি করা যেত । আমি বললাম আপুরে শুক্র শনিবারে আমি তো বাসা হতে বের হতে পারি না । কোন অনুষ্টানেই এই দুইদিন দেখা করতে পারি না বা কোন অনুষ্ঠানে যোগও দিতে পারি না।
শেষ পর্যন্ত ঋতু ছুটি নিল বৃহস্পতিবারে মানে ১২-০৯-১৩ তারিখে । আর লিমা আর আমি অফিস থেকে অর্ধবেলা অফিস করে সেখানে যাওয়ার কথা । শেষ পর্যন্ত দুপুর একটায় লিমা আসল আমার অফিসের সামনে । ও লিমার অফিস আবার মতিঝিলেই মধুমিতার কাছে ।
দুইজন রিক্সা করে রওয়ানা হলাম টিএসসির উদ্দেশ্যে ।
যাওয়ার পথে……. গুলিস্তান
সেদিন এত জ্যাম ছিল না । খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেলাম । ঋতুরা তখনো আসেনি । তারা তখন মিরপুর-১০ এ জ্যামে আটকা । কি আর করা লিমা আর আমি হাটা শুরু করলাম গেলাম পাবলিক লাইব্রেরী এদিক সেদিক ঘুরে আসলাম টিএসসিতে । এসে বসলাম আর অপেক্ষার শুরু……
টিএসসি (আচ্ছা এই ভাস্কর্যের নাম ভুলে গেছি)
এক সময় আমাকে অবাক করে দিয়ে ঋতু নিয়ে আসল মেহেরুন্নেসা আপু যিনি আমার জি প্লাস আর ফেবু ফ্রেন্ড । এই আপুটা ডাক্তার উনার হাব্বিও ডাক্তার । এক ছেলে এক মেয়ে । মেয়ে ও লেভেল পরীক্ষা দিয়েছে আর ছেলে মনে হয় ইন্টারে পড়ে ।
আপুকে দেখে তো আমি অবাক আগে থেকে আমাকে বলেনি ঋতুরা । আমি ম্যাজেন্ডা জামা পড়ছি ওরাও দেখি মেজেন্ডা জামা পড়ে আসছে তাই আরো মজা লাগছিল ।
আপু আসল একটু পর দেখি জি প্লাসের পিচ্চি বাপ্পিটাও উপস্থিত । ওয়াও আমি সারপ্রাইজড । আমি ভাবছিলাম আমি ঋতু আর লিমা মিট করব এখন আমরা পাঁচজন । সবাই পার্কে গিয়ে ঢুকলাম । আমরা এমন সময় গেছি । লোকজন খুবই কম । তবে মাশাল্লাহ গরমও পরছিল মারাত্মক একফোটা বাতাসের দেখা নাই । ঘেমে নেয়ে একাকার । সাজগোজ সব শেষ ।
ফটোসেশনের দায়িত্ব পেল বা্প্পিটা…… প্রথমেই পুচকা খাব সবাই । বসলাম এক জায়গায় … পাঁচজনে মিলে খেলাম । অনেক গল্প অনেক হাসাহাসি হল । তারপর বললাম চলেন হাটি বসে থেকে তো লাভ নাই ।
আবার হাঁটা শুরু । বাপিটা ক্যামেরা ক্লিকাইয়াই যাচ্ছে ।
হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে পৌঁছলাম মুক্ত মঞ্চের কাছে । এখানে আমি আগে কখনো যাইনি । মুক্ত মঞ্চের নাম শুনি কিন্তু দেখি না । অনেক বড় জায়গা । সামনে একটা লেক যদিও ময়লা তবুও অনেক ভাল লাগতেছিল ।
এরা জানি কিতা করে…… আমি জানি না কিন্তু
এখানে ছোট একটা ডিঙ্গি থাকলে মজা হতো ।
লোকজন কম থাকাতে ভালই হইছিল
এখান থেকে উঠে আবার হাঁটা শুরু
কি সুন্দর সাদা মুসান্ডা ফুল ফুটে আছে । একদল পুলাপান দেখি গাছের নিচে বইয়া গাঁঞ্জা টানে
হাঁটতে হাঁটতে তৃষ্ণা প্রচন্ড লেগে গেল । সবাই মিলে ললি লেমন খেলাম । শুধু বাপি খায়নি
একসময় অগ্নিশিখা চিরন্তনে এসে গেলাম । এ জায়গাও আমি দেখিনি আগে । শুধু টিভিতে দেখেছি
কিছু মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যাদি কিনতে চেয়েও শেষে কেউ খাবে না তাই কিনা হল না আর ।
ঢাকার রাস্তাঘাটে যেমন খুঁড়াখুড়ি চলে তেমনি দেখি পার্কেও চারদিকে শুধু খুঁড়াখুঁড়ি চলছে ।
এক জায়গায় এসে দেখি বেলুন ফুটানো স্যুটিং……. শখ জাগলো মনে আমিও ফুটামো । আমি আর লিমা ১০+১০ টাকা দিয়ে শুরু করলাম ফুটানো । বন্ধুকের ওজন দেখি আমার চেয়েও ভারি বাপরে তুলতে আমার খবর হয়ে গিয়েছে । তবে তেমন মিস হয় নাই ৮ টা ফুটাইছি
লিমার ও মিস হইছে কম (এইটা লিমা)
পার্কে এখানে সেখানে শালিকদের আনাগুনা । ক্লিকাইতে মিস নাই …… অবশ্য পাখির ছবি তোলা কষ্টকর । ওড়া মারে বজ্জাতরা
ঘুরে ঘুরে আবার অগ্নিশিখায় । এখানে সবে মিলে ছবি তুললাম অনেক্ষন
শুধু আমাদের বিশ্রাম নাই ক্লান্তি নাই….. শুধু মজাই মজা । কিন্তু পার্কের জোড়ায় জোড়ায় কুকুরগুলো বিশ্রাম নিচ্ছে.
লাল কুত্তা জোড়া
কালা কুত্তা জোড়া
আমাদের মন যেমন আড্ডায় আর আনন্দে নেচেছিল তেমনি শালিখটাও আমাদের দেখে সেদিন ডাঞ্চ করেছিল
ফুল ওয়ালী……… একখান পোজ দিছে… চেহারাটা কি মিষ্টি না
এটা জি প্লাসের বন্ধুদের জন্য ঋতু বানাইছে
প্রায় পাঁচটা বেজে গেছিল । এবার ফেরার পালা । তো এক জায়গায় বসে জিরিয়ে নিচ্ছিলাম । হঠাৎ আমার সামনে দেখি নাগরদোলা ঠিক করছে । আমি এমনিতেই বলতেছি ইশ আমি কখনো নাগরদোলায় উঠিনি । লিমা লাফ দিয়ে উঠল বলল আপু চল আজ প্রথম তোমাকে নিয়ে নাগরদোলায় উঠি । আমি বললাম আপু আমি ভয় পাই তো । লিমা বলল কিছুই হবে না তুমি আমাকে ধরে রেখ । লিমা নাকি এর আগেও উঠেছে নাগরদোলায় । যেই কথা সেই কাজ লিমা আর আমি গিয়ে বসলাম । কিন্তু কোন লোক পাওয়া যাচ্ছিল না উঠার জন্য । ব্যাটার বুদ্ধি করে আমাকে আর লিমাকে বসিয়ে উপরে উঠাইয়া থামাইয়া রাখছিল । অনেকক্ষন উপরে বসা আমি আর লিমা । আর ঋতুরা বসে বসে মশকরা করছে আমাদের অবস্থা দেখে । অবশেষে পাওয়া গেল কয়েকজন । ঘুরানো শুরু নাগরদোলা জীবনের প্রথমবার । এক ঘুরানদিতেই আমি শেষ হাত ঘেমে ভয়ে চিৎকার দেয়া শুরু । এক সময় চেয়ে দেখি ছেলেরা হাসতাছে আমার অবস্থা দেখে লজ্জায় আমি চোখ বন্ধ করে থাকলাম । পরে দেখি আর ভয় লাগছে না…….ওফ ফাটাফাটি ফিলিংসসসসসসসস । অনেক মজা পাইছি………
আমাদের ছোটখাট আনন্দভ্রমণ শেষ পর্যায়ে …… আমি লিমা আর ঋতু এক রিক্সা করে মতিঝিলে আসলাম । আমার হইছে সেইরাম দশা । রিক্সার উপ্রে বইতে হইছিল । তারপরও তিনজন মজা করতে করতে আসছি……… খুব ভাল লাগা মুহুর্তগুলো ছিল ।
==========================================================
ছবির সাইজ একেবারে ছোট করে দিছি । আশাকরি দেখতে অসুবিধা হবে না ।